প্রচ্ছদ > অর্থনীতি > শেয়ার ও ব্যাংকিং

সংস্কারে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ব্যাংকিং খাত

article-img

গত ৫ আগস্ট দেশে সরকার পরিবর্তন হয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসে অন্তর্বর্তী সরকার। ব্যাংকিং সেক্টর পরিচালনার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নিয়োগ করা হয় নতুন গভর্নর। এ ছাড়া প্রায় সব খাতেই পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন গভর্নর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ব্যাংক খাতে বেশ কিছু পরিবর্তন শুরু হয়েছে।

 

এর মধ্যে বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। সেই সঙ্গে বিদেশি ব্যাংকগুলোও স্থানীয় ব্যাংকগুলোতে ক্রেডিট লাইন বজায় রাখার ক্ষেত্রে ভরসা পেয়েছে। ব্যাংকাররাও অনেক বিষয় নিয়ে আশাবাদী। যদিও রিজার্ভ বেশ কমে গেছে।

 

তবু অন্তর্বর্তীকালীর সরকার এর জট খোলার চেষ্টা করছে। ফলে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে ব্যাংক খাতে। 

 

উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ৬ বিলিয়ন ডলারের বাজেট সহায়তা ঋণ চাওয়ার আন্তর্বর্তী সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে আশাবাদী ব্যাংকাররা। তারা বলছেন, এটি বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের তারল্য এবং স্থিতিশীলতাকে আরো বাড়িয়ে তুলবে।

 

কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন গভর্নর এক মাসে কী এমন করেছেন, যা এর আগের গত দুই বছরে কেউ করতে পারেনি। 

 

এসংক্রান্ত দুটি বিষয় সামনে এসেছে। প্রথমটি হচ্ছে- বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা কমে গেছে। অন্যটি হলো- কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর নজরদারির কারণে বাণিজ্যভিত্তিক অর্থপাচার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। 

জানা গেছে, বাংলাদেশের আন্তঃব্যাংক ফরেক্স মার্কেটে এখন গড়ে ৫০ মিলিয়ন ডলার উদ্বৃত্ত থাকছে।

 

ব্যাংকগুলো তাদের ক্লায়েন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।   ব্যবসার আমদানির জন্য ঋণপত্র খুলতে ডলার লাগবে কি না, তা জানতে চাচ্ছে। 

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের নির্দেশনায় ব্যাংকগুলো বকেয়া পরিশোধ করছে, যার ফলে বাজারের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। স্থানীয় ব্যাংকগুলোর ওপর বিদেশি ব্যাংকগুলোর আরোপিত বৈদেশিক মুদ্রাবাণিজ্য ক্রেডিটসীমা হ্রাস সত্ত্বেও এ অগ্রগতি হয়েছে। দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই নতুন গভর্নর ক্রলিং পেগ এক্সচেঞ্জ রেট সিস্টেমের অধীনে ১১৭ টাকার মিড রেটে ২.৫ শতাংশ ব্যান্ড চালু করেন, যার ফলে ব্যাংকগুলো ডলার লেনদেনের জন্য সর্বোচ্চ ১২০ টাকা পর্যন্ত চার্জ করতে পারে। এ পদক্ষেপ এবং ব্যাংকগুলোকে দেওয়া আশ্বাসের ফলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। বিদেশি ব্যাংকগুলোও স্থানীয় ব্যাংকগুলোতে ক্রেডিট লাইন বজায় রাখার ক্ষেত্রে ভরসা পেয়েছে।

এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি ন্যূনতম পর্যায়ে কমিয়ে এনেছে এবং সরকারি সংস্থাগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাহায্য না নিয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে সরকারি এলসির (ঋণপত্র) জন্য ডলারের ব্যবস্থা করতে বলেছে। এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে নেওয়া এসব উদ্যোগ দেশের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনায় দৃশ্যমান পরিবর্তন এনেছে, যার ফলে দ্রুত স্বস্তি আসার পাশাপাশি সামনের দিনগুলোতে আরো স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে।